অমানবিক সমাজ

মানুষ শারীরিকভাবে প্রধানত দুটো শ্রেণিতে পরিচিত, পুরুষ ও নারী। এই পরিচয়টা “জেন্ডার” ভিত্তিক। সংসার এবং সামাজিক ক্ষেত্রে জেন্ডারভিত্তিক দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলোর মধ্যে সামান্য কিছু পার্থক্য থাকলেও, পেশাগত দিক দিয়ে “জেন্ডার” ভিত্তিক কোন পরিচয় থাকে না। সেখানে সবাই সমান।

সংসারের কথায় যদি আসি, তবে প্রতিটি ব্যক্তিকে সংসারের সকল দায়িত্ব নিতে হবে। অর্থাৎ, নিজেরা সংসারের সকল কাজ বন্টন করে নেবেন সুষমভাবে নিজেদের যোগ্যতা ও যুক্তির মাধ্যমে, যেখানে আত্নবিশ্বাস, পরষ্পর বিশ্বাস, আস্থা এবং সম্মান বজায়রাখা আবশ্যকীয়। তবেই সংসার সুখের হবে।

“আমি আমার স্ত্রীর কাজে সাহায্য করি”- এই কথাটির মধ্যে অযোগ্যতার প্রমাণ থাকে এবং সংসারের কাজে নিজেকে কেবল একজন সামান্য সাহায্যকারী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। বরং- “আমরা আমাদের সংসারের কাজ যৌথভাবে করি”- এই বাক্যে উভয়কে সমান যোগ্য এবং দায়িত্বশীলভাবে উপস্থাপন করা হয়।

আমাদের সামাজের অমানবিক নিয়মে সবাই চাপা পরে আছে। ছোট থেকে একটা মেয়েকে বোঝানো হয়- সাজ-সজ্জা, রান্না, সেঁলাই, বাচ্চা জন্মদান ও লালন-পালন, স্বামীর কথা মেনে চলাই তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। আর ছেলেদের বোঝানো হয়- জীবনে কঠিন লড়াই করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কাড়ি কাড়ি টাকা উপার্জন করতে হবে।

পরিবারের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে বৌকে ঝিঁয়ের মত খাটাতে হবে, তাকে গয়নাগাটি, শাড়ি দিয়ে খুশি রাখতে হবে যেন রাতে শারীরিক সুখ দেয়! মেয়েদের পোষাক কি হবে, সেটা সমাজ ঠিক করে। আর ছেলেরা মেয়েদের পোষাককে নিজেদের শিশ্নধার এর সাথে সমানুপাতিক- তা মনে করে!

মেয়েটাকে বলা হয় ছেলেদের কুনজর থেকে বেঁচে থাকতে, নিজের “সম্ভ্রম” বাঁচিয়ে রাখতে, যেন শত কুকাজ করে ভদ্রটি সেজে আসা বরটিকে নিজের দেহ দিয়ে খুশি রাখতে পারে। কিন্তু, কখনই ছেলেদের এটা বলা হয় না যে, নিজেদের সংযত রাখতে, কুনজরে কারো দিকে না তাকাতে, নারী ভোগের পণ্য নয়।

কিন্তু, ঘৃণ্য বাস্তবতা হলো- সেদিনের ছেলেটা পুরুষত্ব বলতে সমাজের সাজানো কাপুরুষতাকে বোঝে আর মেয়েটি হুট করে নারী বনে গিয়ে নিজের অবস্থা কে “ভাগ্য” বলে মেনে নিয়ে ঐ গহনা আর শাড়ি পরিধানেই সুখ খুঁজে!!!

Published by অরণ্য আনাম

Good for nothing

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান